বেসিসে নির্বাচন কেন করতে চাই, পজেটিভলি এই প্রশ্নেরই উত্তর আমাকে দিতে হয়েছে অনেকবার, কারণ আমার কোম্পানিও ভালো চলছে, একই সাথে লোকাল মার্কেটেও আমার কোনো ব্যবসা নেই। সাধারণত দেখা যায় এমন কোনো ব্যক্তি বেসিসের নির্বাচনে আসে না। কাজেই প্রশ্নটা আসা স্বাভাবিক, আমি কেন বেসিসে নির্বাচন করছি।
আমার কাছের মানুষরাও আমাকে জিজ্ঞেস করেছে, নির্বাচন মানেই তো সবই রাজনৈতিক। আপনি কেনো এরমধ্যে নিজেকে জড়ালেন। আমি প্রথম থেকেই সবাইকে বলেছি, বেসিসের নির্বাচন রাজনৈতিক নয়, এরমধ্যে যেনো কোনোভাবেই রাজনীতি না আসে, এটাই আমাদের সকলের প্রচেষ্টা।
গতকাল যখন নির্বাচন বন্ধ হয়ে যাওয়ার খবরটি আমাদের সকলকে স্তব্ধ করে দিয়েছিলো, আমরা অবাক হয়ে আবিষ্কার করলাম মাত্র এক দেড় ঘণ্টার মধ্যে সবাই কি করে এক হয়ে যেতে পারে।
প্রথম যখন খবরটি শুনি, তার পরপরই আমি ফোন পায় একাধিক সাধারণ ভোটারের কাছ থেকে। এমন না তারা আমার অনেক কাছের মানুষ। তারা জানতে চান, কিভাবে এটা হতে পারে, কারা এর পেছনে। তাদেরকে জানাই আমরাও ধোঁয়াশার মধ্যে আছি। আমি ৫টার মধ্যে বেসিস কার্যালয়ে যাবো। আপনারাও চলে আসেন। আমরা সবাই এক থেকেই এই বিপদ (কতিপয় ব্যক্তির কুটচাল) থেকে উদ্ধার পেতে হবে।
বেসিসে পৌঁছানোর পর দেখতে পায় শুধু আমাদের নির্বাচনের অংশগ্রহণকারীরা নয়, সেখানে বেসিসের সাধারণ সদস্যরাও উপস্থিত। মাত্র এক দেড় ঘণ্টার মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন অংশ থেকে প্রায় দেড় শত সদস্য সেখানে হাজির হয়েছেন। তাঁরা কোনো দল বা প্রার্থীর সমর্থনের জন্য শুধু নয়, তাঁরা বেসিসের প্রতি ভালোবাসা থেকেই এসেছেন।
গত বছর পর পর দু’বার বেসিসের নির্বাচন পিছিয়ে যাওয়ায় সবাই আগে থেকেই উদ্বিগ্ন ছিল। তবে এবারের নির্বাচন প্রায় সবার কাছেই এক রকম স্বস্থির আভাস দিয়েছে। এমন স্বত:স্ফুর্ত অংশগ্রহণ আমরা বেসিসে কখনও দেখিনি। ৩১ জন প্রার্থী ছাড়াও সাধারণ ভোটারদের মধ্যে যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপণা তৈরি হয়েছে তা সত্যিই লক্ষণীয়।
যোগ্য প্রতিনিধিকে নির্বাচিত করার জন্য সবার মধ্যে যে সচেতনতা তৈরি হয়েছে তা সত্যিই লক্ষণীয়। এরমাঝে হঠাৎ করে নির্বাচন স্থগিত হওয়ার খবর সবাইকে ব্যথিত করে। সকল সদস্যরা উদ্বিগ্ন বেসিসের ভবিষ্যত নিয়ে। তাই সে কারণেই এই সামান্য সময়ের নোটিশে সকলের স্বত:স্ফুর্ত অংশগ্রহণ। সবাই বেসিসের ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বিগ্ন।
এই বিপদের মধ্যেও সকলকে একতাবদ্ধ থাকতে দেখে, বেসিসের প্রতি সকলের ভালোবাসা আমরা পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারি। আমি যে সব সময় বলেছি, বেসিস রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান নয়। এখানে আমার অংশগ্রহণ মানেই নেতা হতে চাওয়া না। বরং সবাইকে নিয়ে একসাথে সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা। আমরা সবাই কাজ করছি। সফটওয়ার শিল্পে আমাদের সমস্যা এবং বিপদগুলো তাই একই রকম। নির্বাচনের মাধ্যমে তাই আমি সমমনা উদ্যোক্তাদের প্রতিনিধি হতে চাই। আমি তাদের সমস্যা প্রকাশের শক্ত ভাষা হতে চাই। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে চাই বেসিসের সকল সদস্যদের সাথে।
নিজের ব্যবসার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের সফটওয়ার পণ্যকে কিভাবে আন্তর্জাতিকভাবে আরও প্রচার করা যায় তা নিয়ে কাজ করতে চাই। দেশ-বিদেশের বিনিয়োগের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে বেসিসের ছোট এবং মাঝারি সদস্য কিভাবে বিদেশে বিনিয়োগ পেতে পারে তা নিয়ে আমি বিগত ৮/৯ বছর ধরে যে কাজ করেছি তা আরও বড় করে করতে চাই। বাংলাদেশকে বিনিয়োগবান্ধব করার জন্য যা যা দরকার সবাইকে নিয়েই কাজ করতে চাই।
বেসিস আমাদের সকলের প্রাণের সংগঠন। আমরা সবাই যেনো একসাথে কাজ করতে পারি, বিপদে-আপদে পাশে থাকতে পারি তা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।
যারা এই নির্বাচন বন্ধ করার চেষ্টা করেছে, তা আমাদের খুঁজে বের করতে হবে। বেসিসে তাদের কোনো জায়গা হবে না। আমরা বেসিসকে কোনোভাবেই কলুষিত হতে দেবো না।
আমি খুবই আশাবাদি, আমরা এটা করতে পারবো। সকলের যে স্বত:স্ফুর্ত অংশগ্রহণ আমি দেখেছি, এটাই আমাদের বড় অর্জন। আমরা অন্য সকল সংগঠন থেকে আলাদা। আমরা সফটওয়ার শিল্পকে ভালোবাসি, দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা একসঙ্গে কাজ করবো।
Auto Biography: Retiring Young From Bangladesh, Thanks To WordPress
মুনির হাসান কি বলছেন?
Leave a Reply